
কালিহাতীতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকমুক্ত পানি পানে ৫ শতাধিক পরিবার স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে
স্টাফ রিপোর্টার :
টাঙ্গাইলে বিলছায়ায় মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকমুক্ত পানি পানে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ৫ শতাধিক পরিবার। এদিকে দীর্ঘদিনের এই সমস্যায় উপজেলা প্রশাসন ও জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগের পক্ষ থেকে কোন ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ ভুক্তভোগীদের চোখে পড়েনি।
স্থানীয়রা জানান, টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার সল্লা ইউনিয়নের বিলছায়া গ্রামের ৫শতাধিক পরিবারে লোকজন আর্সেনিকমুক্ত পানি পান করছে। প্রতিটি বাড়িতেই নলকূপের নিচে লালচে রংয়ে স্তর পড়েছে।
এ বিষয়ে প্রশাসনের কোন ধরনের টনক পড়ছে না। তবে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি এলাকার ছোট ছোট শিশু এবং বৃদ্ধাদের কথা চিন্তা করে দ্রুত আর্সেনিকের মত বিষপান থেকে রেহাই করবেন । এই এলাকার মানুষ প্রায় ৩০ বছর যাবত এই আর্সেনিকের মত বিষ পান করে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা আরো বলছেন প্রায় ৩০ বছর যাব আর্সেনিকযুক্ত (আয়রনমুক্ত) পানি পান করে পরিবারে অনেকেই পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এদিকে চর্ম ও ক্যান্সার সহ বিভিন্ন জটিল রোগে সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন তারা ।
সুমন আহমেদ বলেন,আর্সেনিকযুক্ত বিশুদ্ধ পানির অভাবে নিরুপায় হয়ে জেনে শুনেই প্রতিদিন এই বিষ পান করতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এই গ্রামের নারী-পুরুষ ছাড়াও কোমলমতি শিশুরা জন্মের পর থেকেই আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম বলেন, বিলছায়া গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবারে অনেকটা জেনে বুঝে আর্সেনিকের মত বিষপান করে যাচ্ছে। শুধুমাত্র অন্য কোন উপায় না পেয়ে আমাদের এই পানি পান করতে হচ্ছে।
বিলছায়া গ্রামের মো. লতিফ বলেন, এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্রতার নিম্ন সীমায় বসবাস করে। অনেকেই পানি ফোটানোর জন্য ভালো ফিল্টার ব্যবহার করতে পারছে না। দারিদ্রতার কারণে নিজেরাই ইট,পাথর বালু দিয়ে তৈরি করে নিচ্ছে পানি ফুটানো ফিল্টার। সেই ফিল্টার দু একদিন যেতে না যেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পুনরায় সেই আর্সেনিকযুক্ত পানি খেতে হচ্ছে পরিবারকে।
তাই সরকারের কাছে নিবেদন গ্রামে কয়েকটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে আর্সেনিকমুক্ত পানি পানে ব্যবস্থা করে দিবেন।
আন্না খাতুন বলেন, আমাদের শান্তি নাই কাপড় ধুতে গেলে লালচে হয়ে থাকে। খাবারের প্লেট জগ,গ্লাস লালচে হয়। দেখতে ভালো লাগেনা। কোন পাত্রে ঘন্টাখানেক পানি রেখে দিলে সেই পাত্রের লালচে ভাব হয়। এছাড়া সেই পানি পান করতে অরুচি হয়। পানি যেন গরুর প্রস্রাবের মত দেখতে। সে পানি খেতে ইচ্ছা হয় না।
এই কষ্ট আমাদের দীর্ঘদিনের। সরকার ১৭টি বছর থাকলো আবার চলে গেল কিন্তু আমাদের পানির কষ্ট দূর হলো না। তাই বর্তমান প্রশাসনের কাছে দাবি রইল আমাদের এই বিষপান আর করতে ইচ্ছা হয় না। আমাদেরকে বাঁচান।
সল্লা ইউনিয়নের বিলছায়া গ্রামের রুস্তম আলী বলেন প্রায় ৩০ বছর যাবত আর্সেনিকযুক্ত পানিতে আক্রান্ত । এই গ্রামে ৫ শতাধিক পরিবারের মাঝে সম্প্রতি সময়ে কিছু সচ্ছল পরিবার আর্সেনিক মুক্ত (আয়রন মুক্ত) নলকূপ ব্যবহার করছে। বাকি সবাই আয়রন যুক্ত পানি পান করছে।
কাজেই সরকার কাছে দাবি করছি দ্রুত সময়ে গভীর নলকূপ স্থাপন করে আয়রন মুক্ত পানি পানের ব্যবস্থা করে দিবেন।